কিভাবে আপনার এলাকার উপযোগী আমন ধানের জাত জানবেন:
আমন ধান আবাদ করতে হলে আপনার এলাকার কৃষির পরি পরিবেশ জানতে হবে । বাংলাদেশের কৃষির পরিবেশ কে দূইটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায় । একটি হলো সমতল ভূমির কৃষি পরিবেশ অন্যটি হলো Fragile ইকো পরিবেশ।
বাংলাদেশের hot spot কি কি :
Fragile এর আওতায় মোট পাঁচটি hot spot রয়েছে। বাংলাদেশের এই পাঁচটি হটস্পট এর আওতায় প্রায় ৫২% জমি চাষাবাদ হয়।
১/হাওর অঞ্চল
বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের বেশ কয়েকটি জেলায় এই হাওর এলাকা বিদ্যমান । এইসব এলাকায় পাহাড়ি এলাকার পানি নেমে আসায় আগাম বন্যা তৈরি হয় ফলে এখানকার কৃষকদেরকে গভীর পানির চাষাবাদযোগ্য জাত আবাদ করতে হয় ।
২.চর অঞ্চল
বাংলাদেশে প্রায় দশ হাজার হেক্টর জমি চর এলাকার মধ্যে অবস্থিত । এইসব এলাকায় বন্যা কবলিত এলাকার জন্য উপযুক্ত এমন ধানের জাত নির্বাচন না করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায় না । তাই এই এলাকার কৃষকরা বন্যা সহনশীল জাত ও নাবী জাত চাষ করে থাকে
৩ /বরেন্দ্র অঞ্চল
বাংলাদেশের রাজশাহী, বগুড়া, নওগা, নাটোর,দিনাজপুর এলাকার প্রায় পাঁচ থেকে সাত হাজার হেক্টর জমি বরেন্দ্র এলাকার অন্তর্ভুক্ত। এই এলাকার পানির খুব স্বল্পতা থাকে তাই কম পানির ফসল এই এলাকার জন্য উপযুক্ত এবং স্বল্পমেয়াদি আমন ধান চাষ করা হয় । আগাম রবি ফসল করা যায় বিধায় এই এলাকায় স্বল্প জাতের আমন ধান রোপন করা উচিত।
৪/পাহাড়িয়া অঞ্চলের কৃষি
পাহাড়ি এলাকায় অতিবৃষ্টির কারণে অনেক সময় বন্যা হয়ে যায় এবং ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই এই এলাকার জন্য বন্যা সহনশীল জাত নির্বাচন করা জরুরী।
৫/ সমুদ্রে উপকূলীয় এলাকার কৃষি:
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ১৯ টি জেলার ২২ শতাংশ জমি উপকূলীয় কৃষি পরিবেশ অঞ্চলের আওতায় । এই এলাকায় জোয়ার ভাটা রয়েছে ,পানিতে লবণাক্ত রয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ও আছে, জোয়ার ভাটার প্রভাবে অনেক সময় সমতল ভূমির ফসল প্লাবিত হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লবণাক্ত পানির কারণে ফসল নষ্ট হয়ে যায়। তাই লবণাক্ত সহনশীল জাত ও জোয়ার ভাটার উপযোগী জাত এই এলাকার জন্য উপযুক্ত।
কোন এলাকার জন্য কোন জাত নির্বাচন করবেন:
এই সকল বিভিন্ন অঞ্চলের পরিবেশগত অবস্থা বিভিন্ন । তাই বিভিন্ন এলাকার জন্য বিভিন্ন পরিবেশ উপযোগী ধানের জাত নির্বাচন করা দরকার
বন্যা এলাকার জাত সমূহ:
বাংলাদেশের নদী এলাকার চরাঞ্চলে প্রতিবছরই বন্যা হয়ে থাকে। তাই সমতল ভূমির চাষাবাদ এর সাথে এই এলাকার চাষাবাদ এর কিছুটা পার্থক্য রয়েছে । এই এলাকায় বন্যা সহনশীল জাত এবং নাবিজাতের রোপা আমন ধন নির্বাচন করা উচিত এবং নিরাপদ জায়গায় বীজতলা করা উচিত।
বন্যা এলাকার উপযোগী জাত :
ব্রি ধান ৫১ ৫২ এবং ৭৯, বিনা ধান ১১,১২
বন্যা এলাকার জন্য নাবী জাত সমূহ:
কোন এলাকার যেসব জায়গায় পানি বিলম্বে সরে যায় সেখানে নাবী জাতের রোপামন ধানের চাষ করা উচিত । এই কারণে বীজতলা বন্যার পরে নিরাপদ জায়গায় করতে হবে কোন কোন এলাকায় ভাসমান বীজতলা করা যেতে পারে।
বিআর২২,২৩ বিনা ধান,১৫,,১৬,নাইজাশাইল,গাইনজা
হাওর অঞ্চলের জন্য উপযোগী জাত:
বিআর১৭,১৮,১৯ এবং ব্রিধান৯১
বরেন্দ্র এলাকার উপযুক্ত জাতসমূহ
ব্রি ধান ৯৩ ,৯৪ ,৯৫ ,
৩৪
খরা এলাকার উপযুক্ত জাতসমূহ
বিধান ৫৫ ৫৬ ৫৭ ৬৬ ৭১বিনাধান১৭
লবণাক্ত এলাকার উপযুক্ত জাতসমূহ :
ব্রিধান ৪০ ৪১ ৫৩ ৫৪ ৭৩,৭৬,৭৮,বিনা ধান ৮,১০
জোয়ার ভাটা এলাকার উপযুক্ত জাতসমূহ
ব্রি ধান ৭৬ ও ৭৮
স্বল্প জীবনকালীন জাত সমূহ :
যেসব এলাকায় আগাম রবি ফসল চাষ করা হয় সেখানে ধানের স্বল্প জীবনকালের জাত চাষ করা দরকার এর মধ্যে বিধান ৩৩ ,৩৯, ৭০,৭১,৭২ ও ৭৫, 103 উল্লেখযোগ্য ।
আমন ধানের হাইব্রিড জাতসমূহ: ,
ব্রি হাইব্রিড ধান ৪, ৬ এবং কোম্পানি হাইব্রিড জাতসমুহ আবাদ করা যাবে ।
আমন ধানের সুগন্ধি জাতসমূহ
বিধান ৩৪ ,৬৩
আমনের লোকাল জাত:
কালো জিরা ,গাইনজা, বাদশাহ ভোগ,দুলাভোগ,তিলককাচারী,
0 Comments