কিভাবে বস্তায় আদা চাষ করবেন?

 কিভাবে বস্তায় আদা চাষ করবেন?

   বস্তায় আদা চাষ কি?







বস্তায় আদা চাষ একটি সহজ প্রযুক্তি। এই পদ্ধতিতে খরচ কম হয় ,অতিরিক্ত জমির দরকার পড়ে না, বাড়ির আনাচে-কানাচে অথবা বাগানের ভিতর কিংবা সবজী মাচার নিচে, গাছের ছায়ায় ,বাগানের ভিতর চাষ করা যায় ।

এই পদ্ধতিতে সিমেন্টের খালি বস্তা অথবা সারের খালি বস্তা ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে প্রযুক্তিটি কৃষক লেভেলে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে অনেকেই ৫০০-১০০০বস্তা আদা চাষ করতেছে ।

বাংলাদেশে আধার চাহিদা কত ? আদা চাষ লাভজনক হবে কিনা ?

বর্তমানে বাংলাদেশে আধার চাহিদা প্রায় সাড়ে তিন লাখ মেট্রিক টন। এখন উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন ।একজন মানুষ প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ গ্রাম আদা ব্যবহার করে থাকেন। আদার চাষ বাংলাদেশ অবশ্যই লাভজনক হবে ।

বস্তায় কেন আদা চাষ করবেন? 

অতিরিক্ত জমির প্রয়োজন হয় না ,খরচ কম, লাভ বেশি, সহজ প্রযুক্তি ,এজন্য বস্তায় আদা চাষ করতে অনেকেই আগ্রহী ।


কোন সময়ে বস্তায় আদা চাষ করবেন: 

সাধারণত চৈত্র -বৈশাখ মাসে আদা চাষ করা হয়। ইংরেজিতে এপ্রিল -মে মাসে আদা চাষ করা হয় ।তবে এপ্রিলের শুরুতেই আদা চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।


আদার বীজ কোথায় পাওয়া যাবে ?

আদার বীজ আপনার নিকটস্থ ভালো কৃষকের কাছে পাইতে পারেন বিশেষ করে প্রদর্শনী কৃষকের কাছে যোগাযোগ করলে আপনি ভাল জাতের আদার বীজ পাবেন ।এছাড়া উপজেলা কৃষি অফিস ,কৃষি গবেষণার অফিস এবং মসলা গবেষণার অফিসে আপনি আদার বীজ পাবেন ।এছাড়া অনলাইনে ডিজিটাল যোগাযোগের মাধ্যমে আপনি আদার বীজ পাইতে পারেন।

কোন কোন জাতের আধা বস্তায় চাষ করা যাবে?


বারিআদা১ বারি আদা ২ ।এ ছাড়া স্থানীয় জাতের পাহাড়ি আধা চাষ করতে পারেন।

কিভাবে আদা বীজ শোধন করবেন?

আদার বীজ শোধনের জন্য সাধারণত: ম্যানকোজেব অথবা ভেবিস্টিইন ব্যবহার করা যাইতে পারে । প্রতি লিটার পানিতে ২-৩  গ্রাম পাউডার জাতীয় ছত্রাকনাশক মিশিয়ে আদার বীজ ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে ।এরপর ২৪ ঘন্টা ছায়াতে শুকিয়ে আদা রোপন করবেন।

কিভাবে বস্তার মাটি তৈরি করবেন ?

প্রতি বস্তায়  সাধারণত ১২ থেকে ১৫ কেজি মাটি, গোবর বা ভার্মি কম্পোস্ট ৫ কেজি, বালি পাঁচ কেজি ছাই এক কেজি কার্বো ফুরান গ্রুপের দানাদার ২৫ গ্রাম ,টিএসপি দশ গ্রাম, এমওপি দশ গ্রাম, জিংক এবং বোরন সার ৫ গ্রাম একত্রে মিশে বস্তার মাটি তৈরি করতে হবে।

বস্তায় আদা লাগানোর পদ্ধতি 

প্রতিটি বস্তায় ২০ থেকে ২৫ গ্রাম সাইজের এক থেকে তিন টুকরা আদা মাটির উপর থেকে দুই থেকে তিন ইঞ্চি গভীরে বসে দিতে হবে ।মাটি শুকনা থাকলে হালকা পানি দিতে হবে 

আদার বস্তা কোথায় রাখবেন? 

বন্যার পানি যাতে না পায় সেজন্য বাড়ির উঁচু স্থানে আদার বস্তা রাখতে হবে ।গাছের ছায়াতেও রাখা যাবে ,সবজির মাচার নিচেও রাখা যাবে, বাড়ির আনাচে-কানাচে রাখা যাবে, এমনকি আপনার ফল বাগানের মাঝেও বস্তা রাখা যাবে ।

তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যাতে অতি বৃষ্টিতে বা জোয়ার ভাটার পানিতে বস্তা পানিতে ডুবে নেওয়া যায়।


বস্তায় আদা চাষ করলে কি পরিচর্যার দরকার 

আদা প্রায় ৩০০ থেকে ৩১৫ দিন সময় লাগবে। এই সময়ের মধ্যে ৪৫ দিনের মাথায় ও ৯০ দিনের মাথায় কিছু ইউরিয়া ও পটাশ সার বস্তায় দিতে হবে ।এছাড়া কোন আগাছা থাকলে সরিয়ে ফেলতে হবে । উইপোকা ,পিঁপড়া অথবা কোন রোগ বালাই দেখা দিলে অবশ্যই তার দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

কতদিন পরে আদা পাওয়া যাবে 

সাধারণত ৩০০ থেকে ৩১৫ দিনের মধ্যে আদা ফলন দিয়ে থাকে। একটা বস্তাতে ভালোভাবে আবাদ করলে ১ থেকে ২ কেজি আদা পাওয়া যাইতে পারে।


বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষে বস্তাপ্রতি কত ফলন পাওয়া যায় ?

বস্তা প্রতি সাধারণত ১থেকে ২ কেজি আদা পাওয়া যায়। অনেক সময় ভালো ফলন হইলে দুই থেকে তিন কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়ার দৃষ্টান্ত দেখা গেছে ।

বস্তা প্রতি তি আদাঢাষে কত খরচ 

বস্তায় আদা চাষ করলে প্রতি বস্তায় ২০ থেকে ২৫ টাকা খরচ পড়ে ।

বন্যা এলাকায় ভাসমান বেডে আদা চাষ করা যাবে কিনা? 

নদী এলাকায় বন্যার কারণে ভাসমান পদ্ধতিতে আদা চাষ করা যাবে । বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বরিশাল বিভাগের অনেক জেলায় ভাসমান বেডে আদা চাষ দেখা যায়।

ভাসমান বেডে 


ছাদ বাগানে আগা চাষ করা যাবে কিনা 

ছাদ বাগানেও আদা চাষ করা যাবে ।

আদা তোলার পর কিভাবে আধার বীজ সংরক্ষণ করব ?

আদার বীজ সাধারণত মাটিতে গর্ত করে নিচের দিকে বালি দিয়ে তার উপর আদা বিছিয়ে উপরে আবার বালি দিতে হয় এবং এর উপর খড় দিয়ে ঢেকে দিতে হয় ।এইভাবে আদা বীজ প্রায় এক বছর রাখা যাবে। 

বাংলাদেশে কোন সময়ে আদর চাহিদা বেশি থাকে ?

সাধারণত শীতকালে আদার চাহিদা বেশি থাকে। এছাড়া দুই ঈদের সময়ে আদার চাহিদা বেশি থাকে।








Post a Comment

0 Comments