ফলের প্রযুক্তি বিস্তারে ফল মেলা :
ফল মেলা আসলে কি?
মেলা মানে মিলন স্থল । ফল মেলা মানে বিভিন্ন ফলে মিলন স্থল । ফল মেলায় দেশের ও বিদেশের উৎপাদিত সকল ধরনের ফলের প্রযুক্তি বিষয়ে ধারণা দেওয়ার জন্য মেলার আয়োজন করা হয় । এই মেলা জাতীয় পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। মেলায় ফল চাষি ,উদ্যোক্তা, ফল ব্যবসায়ী ,বিজ্ঞানী ,প্রযুক্তি সম্প্রসারণ কর্মী, বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, আমদানিকারক, রপ্তানি কারক , শিল্প প্রতিষ্ঠান সহ ফলের সাথে সম্পৃক্ত সকল প্রকার প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে থাকে। ফল মেলার মাধ্যমে বিভিন্ন ফলে প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য জনগণকে সচেতন করা হয়। প্রতি বৎসর পর প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে সেমিনার সহ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে ২০২৫ সালের প্রতিপাদ্য বিষয় " দেশি ফল বেশি খাই, আসুন ফলের গাছ লাগাই"।
একটি ফল মেলায় কি কি বিষয় ডিসপ্লে করা হয়?
ফল মেলায় যে সকল বিষয় প্রদর্শন বা ডিসপ্লে করা হয়:
১। দেশের প্রচলিত ও অপ্রচলিত ফলসহ বিদেশি ফল নমুনা প্রদর্শন করা হয়,
২। বিভিন্ন প্রজাতির ফল গাছের চারা বিদ্রোহে ও প্রদর্শন করা হয় ,
৩। ফল চাষের পদ্ধতি প্রদর্শন করা হয়,
৪। ফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জনগণকে ধারণা দেওয়া হয় ,
৫। আগ্রহী ফল চাষিদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়,
৬। ফল উৎপাদনে দক্ষতার জন্য ভাল কৃষকদের কে পুরস্কৃত করা হয়।
৭। নিরাপদ ফল উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ প্রদর্শন করা হয় ,
৮। ফল থেকে তৈরী বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করা হয় ,
৯। মৌসুমী উৎপাদিত বিভিন্ন ফল বিক্রয় করা হয়।
ফল মেলার উদ্দেশ্য কি?
১। ফল চাষে কৃষকদের কে উদ্বুদ্ধ করা ,
২। ফলের আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে চাষীদের কে অবহিত করণ,
৩। নিরাপদ ফল উৎপাদনে কৃষককে উৎসাহিত। করা,
৪। ফল বাগানের জন্য উদ্যোক্তা তৈরি করা ,
৫। পুষ্টির ঘাটতি পূরণের জন্য ফল খাওয়ার ব্যাপারে জনসচেতনতা বাড়ানো ,
৬। ফলের ব্যবসার প্রসার ঘটানো ,
৭। ফলের প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের প্রসার ঘটানো,
৮। ফলজ বৃক্ষ রোপণে জনগণকে সচেতন করা,
৯। বাণিজ্যিকভাবে ফল বাগান স্থাপনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা ,
১০।ফলের নতুন নতুন জাত সম্পর্কে চাষীদের কে অবহিত করা ।
১১। ফল মেলা ফলের উৎপাদন বাড়াতে
সাহায্য করে।
বাংলাদেশের উৎপাদিত ফল সমূহ:
বাংলাদেশে প্রচলিত অপ্রচলিত ফল মিলে প্রায় দেড়শটির মতো ফল রয়েছে। মনে রাখার সুবিধার্থে ছড়ার আকারে কিছু ফল উল্লেখ করা হলো।
"আম জাম লিচু তাল,আতা লেবু কলা ;
পেয়ারা পেঁপে কাঁঠাল, আপেল আর কমলা ।
আমড়া ডালিম বড়ই, নারিকেল বেল;
সফেদা কাজুবাদাম ,চেরি কদবেল ।
আঙ্গুর নাশপাতি, বাতাবি লেবু ;
আনারস ডেওয়া ,জলপাই এভোকেডো।
পানিফল পিচফল, চাইনিজ কমলা ;
তরমুজ স্ট্রবেরি, তেতুল আর করমচা ।
বাঙ্গী বিলিম্বী ,পেশান ডেফল ;
ডুরিয়ান আখরোট, ড্রাগন আর লটকন।
আমলকি জামরুল ,টক স্বাদে কামরাঙ্গা ;
অরবরই মালভেরি ,আচারে চালতা।
ফলসা লুকলুকি, কাউ ফল রুটি ফল,
জাবটিকাবা গোলাপজাম ,সাতকড়া বেতফল।"
বাংলাদেশের কোন এলাকায় কোন ফল ভালো হয়?
আম --বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম জেলা গুলোকে ভালো হয় ।
আমের আধুনিক জাত সমূহ:
কাঁঠাল --সকল জেলা, তবে ঢাকার উচু এলাকা সাভার, ভালুকা ,ভাওয়াল, মধুপুরের গড় সিলেটের পাহাড়ি এলাকা, রাঙ্গামাটি খাগড়াছড়ি ও পার্বত্য এলাকায় কাঁঠাল ভালো হয় ।
কলা-- বগুড়া ,বরিশাল ,রংপুর ,গাইবান্ধা, নরসিংদী, ময়মনসিংহ ।
পেঁপে --রাজশাহী, নাটোর ,পাবনা, যশোহর জেলায় ভালো হয় ।
আনারস-- ঢাকা নরসিংদী , সিলেট মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য এলাকা টাঙ্গাইলের মধুপুর ।
পেয়ারা-- বরিশালের পিরোজপুর, স্বরূপকাঠি, ঝালকাঠি ভীমরূলী ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজশাহীর সকল জেলা ।
কুল --রাজশাহী কুষ্টিয়া খুলনা বরিশাল ও রাজশাহীর কিছু জেলা ।
লিচু --রাজশাহী দিনাজপুর ঠাকুরগাঁও কুষ্টিয়া যশোহর পাবনা ময়মনসিংহ চট্টগ্রাম ।
নারিকেল-- সকল জেলা তবে উপকূলীয় জেলাগুলিতে নারিকেল ভালো হয় ।
কমলা --সিলেট মৌলভীবাজার পার্বত্য এলাকা পঞ্চগড়
লেবু --সব জায়গায়ই হয় তবে সিলেট পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা মৌলভীবাজার ঢাকার সাটুরিয়া মানিকগঞ্জ ঢাকা ধামরাই ।
বাতাবি লেবু-- সিলেট ও পার্বত্য পার্বত্য জেলা
আমড়া---বরিশাল
সফেদা -বরিশাল ও চট্টগ্রাম পার্বত্য চট্টগ্রাম
তৈকর-- সিলেট
আমলকি-- রাঙ্গামাটি খাগড়াছড়ি
আশ-ফল --পার্বত্য এলাকা
রামবুটান --দেশের দক্ষিণ অঞ্চল-
স্ট্রবেরি-- শীত এলাকা
বিলাতি গাব --কুমিল্লা ফরিদপুর যশোর রাজশাহী খুলনা বরিশাল পিরোজপুর সব জেলায় হয় পাহাড়ি এলাকায় বেশি হয়
ড্রাগন ফুট--ঝিনাইদহ শহর মেহেরপুর
খেজুর--যশোর কুষ্টিয়া ঝিনাইদহ বাগেরহাট
কাজুবাদাম--পার্বত্য এলাকা ও রংপুর অঞ্চলের কিছু জেলা
তাল--যশোর কুষ্টিয়া খুলনা বরিশাল দিনাজপুর নাটক রাজশাহী পাবনা
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এর উদ্ভাবিত স্থানভিত্তিক জাতসমূহ:
জাতীয় ফল মেলা ২০২৫ প্রদর্শিত ফলের ডিসপ্লে :
0 Comments